এয়ার স্ট্রাইক নিয়ে প্রশ্ন করার জন্য সীতারামান কংগ্রেসকে তুলোধনা করেছেন

পুলওয়ামার সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ভারতের বায়ু হামলার বিষয়ে প্রশ্ন তোলার জন্য তুলোধোনা করলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নির্মলা সীতারামান।
মন্ত্রী বলেন, বিজেপি সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে কাজ করার স্বাধীনতা দিয়েছে এবং তারা সেই কাজ সাফল্যের সাথে করেছেন।
সীতারামান বলেছেন, “সশস্ত্র বাহিনীদের শ্রদ্ধা না দেখিয়ে, বরং তাদেরকে নিজেদের স্বার্থে নিচু করার জন্য এবং এমনকি তাদেরকে অপমান করাই কংগ্রেস দলের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল।”
সংবাদ সংস্থা পিটিআই কর্তৃক আয়োজিত একটা ইভেন্টে তিনি বলেন, “তাদের (কংগ্রেস) জোটের অংশীদার, যেমন কমিউনিস্ট অথবা কোনও আঞ্চলিক দল, কংগ্রেসকে বলতে পারত যে এমন ভাবে সশস্ত্র বাহিনীর বদনাম করবেন না।”
তিনি অভিযোগ করেন, “আজ তারা পুলওয়ামার জন্য কুম্ভিরাশ্রু ঝরাচ্ছেন।”
সীতারামান বলেন, “সরকারের কাছে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য ছিল যে এই ধরনের (পুলওয়ামার মতো) আত্মঘাতী সন্ত্রাসী হামলা আবার ঘটতে পারে এবং এই ধরনের আক্রমণ প্রতিরোধের জন্যই আমদের বালাকোটে প্রতিরোধমূলক হামলা করতে হয়েছিল।” সীতারামান একজন প্রাক্তন সেনা ও বুদ্ধিজীবীর সাথে সাক্ষাৎ করতে একটি সভায় গিয়েছিলেন বিজেপির প্রার্থী এন রামচন্দ্র রাও এর পরিচালনায়, যেখানে মালকাজগিরি জেখানেকেন্দ্র থেকে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তিনি বলেন, বিরোধীরা এমনকি সরকারের কছে প্রমাণ চাওয়ার ধৃষ্টতাও দেখিয়েছেন, “… সাহসী সৈন্যরা এবং বায়ুযোদ্ধারা কাজ সম্পাদন করতে যান, সেলফী তুলতে নয়। তারা আপনাদের প্রমাণ দেখানোর জন্য বাধ্য নয়। এটা একজন সৈনিকের কাজ নয়। তিনি যান, তার কাজ শেষ হলে তিনি দেশে নিরাপদে ফিরে আসেন।” তিনি বলেন, “একজন দুর্ভাগ্যবান ব্যক্তি (উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান) পাকিস্তানের হাতে ধরা পরেছিলেন, আপনারা দেখেছিলেন তিনি কিভাবে মর্যাদা ও গর্বের সাথে মাথা উঁচু করে একজন যুদ্ধবন্দীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন।”
27 ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানি বিমানের সঙ্গে রেষারেষির সময় তার মিগ 21 বাইসন ভেঙে পড়ার পর বর্তমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু তার বিমানটি ধ্বংস হবার আগে অভিনন্দন বর্তমান, পাকিস্তান বিমান বাহিনীর একটি F-16 ধ্বংস করেন। সেখানে দাঁড়িয়ে তার যা বলা উচিৎ নয় এমন একটি শব্দও তিনি উচ্চারণ করেননি । এটাই একটি পেশাদার ভারতীয় সৈনিকের প্রশিক্ষণ। “প্রমাণের জন্য দাবী করে আপনারা তাদের সম্মান করতে চান নাকি আপনারা তাদের ‘রাস্তার গুন্ডা’ বলে তাদের অসম্মান করতে চান। কত মানুষ মারা গেছে … একটি সীমা আছে … হাস্যকর।” সীতারামান বলেন। তিনি বলেন, “1971 সালে ভারত-পাক যুদ্ধের সময় 90,000 পাকিস্তানি সৈন্যকে ভারত নিঃশর্তভাবে ফেরত পাঠিয়েছিল এবং আমাদের যুদ্ধবন্দীকে ফিরিয়ে দেওয়ার পর … পাকিস্তানে এটাকে শান্তিজনক অঙ্গভঙ্গি হিসাবে প্রচার করা হয়েছিল।” এবং পাকিস্তানে এও দাবি করা হয়েছিল যে প্রধানমন্ত্রী (ইমরান খান)কে নোবেল পুরস্কার দিতে হবে।
সীতারামান বলেন, তিনি পাকিস্তানের কথা বুঝতে পেরেছিলেন যে, “কেন ভারতের কিছু অংশ এই কথা বলছে? আমি অবাক হয়ে গেলাম … কোন লোকজন এ কথা বলছে এবং কোন রাজনৈতিক দল তাদের সমর্থন করছে! আমরা এটা চাই না এবং নরেন্দ্র মোদির কেন্দ্রের ক্ষমতায় ফিরে আসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
তিনি আরও বলেন, “যদি কোনো সরকার প্রাক্তন সেনা ও বর্তমান সেনাদের অভিন্ন চাহিদা পূরণ করতে পেরেছে এবং তাদের প্রতিটি প্রয়োজন সরবরাহ করতে পেরেছে, তা হল এই মোদী সরকার।” সীতারামান কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন যে, সিনিয়র কংগ্রেসের নেতারা আর্মি চিফকে রাস্তার গুন্ডা বলে অভিহিত করেছেন।
“আমি বলতে খুব খারাপ লাগছে, যে এটি আমাকে ব্যাথিত করেছে … ওই দলের জন্য আমার লজ্জা হয়। বিমান বাহিনীর প্রধানকে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে মিথ্যাবাদী বলে অভিহিত করা হয়েছে কারণ তাদের স্বার্থের জন্য কিছু করা হয়নি … রাফায়েল (যুদ্ধবিমান চুক্তি) তাদের সময়ের মধ্যে ঘটেনি কিন্তু মোদির সময়কালে হয়েছে।” 2008 সালের 26 শে নভেম্বর মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসী হামলার কথা উল্লেখ করে তিনি দাবি করেন, সশস্ত্র বাহিনী তখন সরকারকে বলেছিল যে তারা কিছু করতে চায় এবং তারা প্রস্তুত ছিল এবং অনুমোদন চেয়েছিল। “পরিষ্কার প্রমাণিত হয়েছে যে পাকিস্তান এটি দমন করেছে।”
তৎকালীন কংগ্রেস সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে সম্মানের সাথে দাড়ানোর স্বাধীনতা টুকুও দেয়নি। সীতারামান বলেন, “বর্তমান সরকার এই কাজ করেছে এবং সশস্ত্র বাহিনীকে স্বাধীনতা দিয়েছে, যাতে এইবার তারা স্থির করতে পারে, কিভাবে তারা পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে, কারণ এই কাজটা পরিচালনা করার জন্য তারাই সেরা। তারা (সশস্ত্র বাহিনী) এই আহ্বানটি গ্রহণ করেছিল এবং তাদের এমন উপায়ে কাজটি করতে হয়েছিল যাতে তা পাকিস্তান এবং সমগ্র বিশ্বকে শক দিতে পারে যে ভারত নিজের দক্ষতায় শত্রুর এলাকায় গিয়ে প্রত্যাঘাত করতে সক্ষম।”
সীতারামান বলেন, মুম্বাই হামলার পর পূর্ববর্তী সরকার শুধুমাত্র একটি প্রতিরোধক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এর প্রয়োজন হত না। পাকিস্তান যারা নিজেদের সন্ত্রাসী হামলার শিকার বলে দাবী করে, পুলওয়ামার ঘটনার পর, তারা সন্ত্রাসবাদীদের প্রশিক্ষণকেন্দ্রের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেয় নি।