ইমরানের বিজেপিতেই আস্থা

ভারতে লোকসভা নির্বাচন যখন এগিয়ে আসছে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কাছ থেকে বিজেপি অপ্রত্যাশিত সমর্থন পেয়েছে।
এক সাক্ষাৎকারে খান বলেন, তিনি মনে করেন যদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি ( বিজেপি ) 11 এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া সাধারণ নির্বাচনে জয়লাভ করে, তাহলে ভারতের সাথে শান্তি আলোচনার আরও ভাল সুযোগ হতে পারে।
ইমরান বলেন, যদি ভারতে পরবর্তী সরকার বিরোধী কংগ্রেস পার্টির নেতৃত্বে আসে, তাহলে বিতর্কিত ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে বোঝাপড়া স্থাপন সমস্যার হবে, কারণ কংগ্রেস বোঝাপড়ার ক্ষেত্রে ডানপন্থী দলগুলির থেকে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হওয়ার ভয়ে থাকবে।
এক সাক্ষাত্কারে ইমরান সাংবাদিকদের বলেন, “সম্ভবত যদি বিজেপি – একটি ডানপন্থী দল বিজয়ী হয়, কাশ্মীর নিয়ে কিছু ধরনের বন্দোবস্ত সম্ভব হবে”।
গত আগস্ট থেকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকারী ইমরান বলেন, কাশ্মীরের মুসলিম ও ভারতের সাধারণ মুসলমানরা ভয়াবহ বিচ্ছিন্নতার সম্মুখীন হচ্ছেন। প্রাক্তন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা বলেন, “আমি কখনোই ভাবিনা না যে ভারতে আসলেই কী ঘটছে তা আমি দেখতে পাচ্ছি।” “তবে মুসলমানদের উপর হামলা হচ্ছে।”
সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানায়, ইমরান খান বলেছেন, তিনি অনেক ভারতীয় মুসলমানদের জানতেন যারা বহু বছর ধরে ভারতে তাদের অবস্থা নিয়ে সুখী ছিলেন কিন্তু চরমপন্থী হিন্দু জাতীয়তাবাদের জন্য এখন খুবই চিন্তিত।
তিনি বলেন মোদি, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর মতো, “ভয় এবং জাতীয়তাবাদী অনুভূতি” এর উপর ভিত্তি করে নির্বাচনে লড়ছেন।
জম্মু ও কাশ্মিরের জনগণের কাছ থেকে কয়েক দশকের পুরোনো বিশেষ অধিকার ছিন্ন করার প্রস্তাব দিয়েছে।এই বিশেষ অধিকারের ফলে কাশ্মীর ছাড়া অন্য কোনো রাজ্যের মানুষ এখানে সম্পত্তি ক্রয় করতে পারেননা। যদিও এই প্রস্তাব একটি নির্বাচনী কৌশল হতে পারে।
ইমরান ভারতকে সাদা পতাকা প্রদর্শন করে বলেছেন, ইসলামাবাদ দেশের সকল পাকিস্তান ভিত্তিক জঙ্গীবাহিনীকে নির্মূল করার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং এই কর্মসূচির জন্য পাকিস্তানের শক্তিশালী সেনাবাহিনী সরকারকে পূর্ণ সমর্থন করছে।যাদের ধ্বংস করা হবে তাদের মধ্যে কাশ্মীরের ঘটনায় জড়িত জঙ্গীগোষ্ঠিও অন্তর্ভুক্ত।
পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী পাকিস্তান এবং ভারত উভয়ই পূর্ণ কাশ্মীরের অধিকার দাবি করে কিন্তু শাসন করে কিছুটা অংশ।
ইমরান বলেন, কাশ্মীর ইস্যু একটি রাজনৈতিক সংগ্রাম এবং এখানে কোনো সামরিক সমাধান সম্ভব না।আরও যোগ করেন, যদি পাকিস্তান থেকে সশস্ত্র জঙ্গিরা সীমান্ত চলে আসে তাহলে কাশ্মীরিদের ভোগান্তি ঘটে, যার ফলে ভারতীয় সেনাবাহিনীও উত্তেজিত হয়ে পড়ে।
1947 সালে ব্রিটেন থেকে স্বাধীনতা অর্জনের পর পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে
তিনটি যুদ্ধ হয় যার মধ্যে দুইটি কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে।
ফেব্রুয়ারি মাসে আত্মঘাতী বোমা হামলায় কাশ্মীরে 40 জন ভারতীয় আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ানের হত্যা পর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক সঙ্কটজনক হয়ে উঠেছে।
পাকিস্তান ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জাইশ-ই-মোহাম্মদ, 14 ফেব্রুয়ারির হামলার দায় স্বীকার করে কিন্তু ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করেছে। কিন্তু এই বোমা হামলাটি ভারতকে একটি জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবিরের বিরুদ্ধে ক্রস সীমান্তে বিমান হামলা চালানোর অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। পাকিস্তানও তাদের বিমানশক্তির মাধ্যমে ভারতের এই হামলার প্রত্তুত্তর দিয়েছে।